গাঁজা
গাঁজা (/ˈkænəbɪs/, ইংরেজি: Cannabis) ( হোমিওপ্যাথি ঔষধ cannabis sativa ) মূলত সপুষ্পক উদ্ভিদের গণ, যেখানে সাতিভা গাঁজা, ইন্ডিকা গাঁজা এবং রুডের্লাইস গাঁজা, এই তিনটি ভিন্ন প্রজাতি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এটি মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়ার স্থানীয় প্রজাতি।গাঁজা দীর্ঘকাল ধরে বীজ ও বীজ তেল, ঔষধি উদ্দেশ্যে এবং একটি বিনোদনমূলক ড্রাগ হিসাবে শণ আঁশের জন্য ব্যবহৃত হয়ে আসছে। আঁশের উত্পাদন বৃদ্ধি নির্বাচন করতে বাণিজ্যিক শণ পণ্যসমূহ গাঁজা গাছ থেকে তৈরি করা হয়। ==গাজাৱ কুফল==
দেশে দেশে
ভিন্ন ভিন্ন নামে বিভিন্ন দেশে এর বিস্তার। গাঁজা গাছের শীর্ষ পাতা, ডাল এবং ফুল যা এই উপমহাদেশে গাঁজা নামে পরিচিত একই জিনিস পশ্চিমা দেশ গুলোতে মারিজুয়ানা বা মারিহুয়ানা নামে পরিচিত।
গাছের পাতা বা ডালের আঠালো কষ দিয়ে তৈরী এ অঞ্চলের চরস নামের জিনিসটিই পশ্চিমা দেশের হাশিশ। ভাং, সিদ্ধি, পাট্টি, সব্জি, গ্রাস, মাজুন নানা নামে ডাকা হয় এই বিষাক্ত বস্তুটিকে।
ভেষজ গুণ
গাঁজা শরীরের বিষ-ব্যথা সারায়। এ কথার বর্ণনা রয়েছে ভারতবর্ষের প্রাচীন ও মধ্যযুগীয় চিকিৎসাশাস্ত্রে। তবে এ কথাও সুবিদিত যে, গাঁজা, ভাং ও মারিজুয়ানা গ্রহণ মানুষের স্মরণশক্তি হ্রাস করে এবং দীর্ঘ মেয়াদে মনোবৈকল্য ঘটায়। যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানীরা এখন গাঁজা, ভাং ও মারিজুয়ানার ওপর গবেষণা করে জেনেছেন, এ সব মাদকদ্রব্য থেকে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াহীন ব্যথানাশক ওষুধ প্রস্তুত করা সম্ভব, যা মানুষের কোনো ক্ষতি করবে না। গবেষণাটি করেছে ফ্রান্সের বায়োমেডিকেল ইনস্টিটিউট। এর নেতৃত্ব দিয়েছে আইএনএসইআরএম। ফ্রান্সের গবেষকরা জানান, ‘তারা ইঁদুরের মস্তিষ্কের যে অংশের কোষের নিউরনে গাঁজা বা মারিজুয়ানার মাদক ক্রিয়া করে তা ওষুধ প্রয়োগ করে নিষ্ক্রিয় করেন প্রথম। এর পর ওই ইঁদুরের শরীরে এসব মাদক প্রবেশ করিয়ে দেখা গেছে, তাতে ইঁদুরটি বেহুশ হয় না। বরং ওটির প্রাণচাঞ্চল্য ঠিকই থাকে। এ অভিজ্ঞতা থেকে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ব্যথানাশক হিসেবে গাঁজা বা মারিজুয়ানার ভালো গুণ মানুষের বিভিন্ন রোগের ওষুধ এবং অস্ত্রোপচারের জন্য চেতনানাশক হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। শিগগিরই গাঁজা ও মারিজুয়ানার নির্যাস থেকে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াহীন এ ওষুধ প্রস্তুত হবে। আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়া ও আলাবামা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা এক গবেষণায় দেখেছেন, ভাং ও গঞ্জিকা সেবনে ফুসফুসের ক্ষতি তামাক পাতায় প্রস্তুত সিগারেট পানের চেয়ে কম।
গাঁজা (ঔষধ)
গাঁজা, সাধারণত মারিজুয়ানা, গঞ্জিকা, গাঞ্জা, সিদ্ধি ইত্যাদি হিসেবে পরিচিত; মূলত গাঁজা উদ্ভিদের এক ধরণের প্রস্তুতি যা সাইকোঅ্যাক্টিভ ড্রাগ এবং ঔষধ হিসেবে ব্যবহারের উদ্দেশ্যে প্রস্তুত করা হয়।] ফার্মাকোলজিক্যালি, গাঁজার প্রধান সাইকোঅ্যাক্টিভ উপাদান হল টেট্রাহাইড্রোক্যানাবিনল (টিএইচসি); এটি উদ্ভিদের ৪৮৩টি পরিচিত যৌগের ১টি, এছাড়াও ৮৪ টি অন্যান্য ক্যানাবিনোয়েড্স রয়েছে, যেমন ক্যানাবিডিওল (সিবিডি), ক্যানাবিনল (সিবিএন), টেট্রাহাইড্রোক্যানাবিভারিন (টিএইচসিভি), এবং ক্যানাবিগেরো (সিবিজি)।
গাঁজা প্রায়ই এর সাইকোঅ্যাক্টিভ এবং শারীরবৃত্তীয় প্রভাবের জন্য ব্যবহৃত হয়, যা অতিরিক্ত বা রমরমা মেজাজ, শিথিলায়ন, এবং ক্ষুধা বৃদ্ধি করে। সম্ভাব্য পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে স্বল্পমেয়াদী স্মৃতি হ্রাস, মুখগহ্বরে শুষ্কতা, অনভিজ্ঞের মতো আচরণ করা, চোখ লাল হওয়া, এবং প্যারানয়া বা উদ্বেগ অনুভূতি হওয়া।
আধুনিককালে গাঁজা বিনোদনমূলক বা চিকিৎসার ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে এবং প্রাথমিককালে ধর্মীয় বা আধ্যাত্মিক আচার-অনুষ্ঠানের অংশ হিসাবেও খ্রিষ্টপূর্ব ৩ হাজার বছর পূর্বে এর ব্যবহার হত। ২০শ-শতাব্দীর প্রথমদিকে গাঁজা আইনি সীমাবদ্ধতার বিষয় হয়ে উঠে, ফলে এর ব্যবহার এবং সাইকোঅ্যাক্টিভ ক্যানাবিনয়েডস ধারণকারী গাঁজা প্রস্তুতি ও বিক্রয় বর্তমানে বিশ্বের অধিকাংশ দেশে অবৈধ। জাতিসংঘ একে বিশ্বের সর্বাধিক ব্যবহৃত অবৈধ ড্রাগ হিসেবে বিবেচনা করে। ২০০৪ সালে, জাতিসংঘের অনুমানে, বিশ্বব্যাপী বার্ষিক গাঁজার ব্যবহারে বিশ্বের প্রাপ্তবয়স্ক জনসংখ্যার প্রায় ৪% (১৬২ লক্ষ জন) গাঁজা বাবদ ব্যয় করে, এবং প্রায় ০.৬% (২২.৫ লক্ষ) লোক দৈনিক গাঁজা ব্যবহার করে থাকে। চিকিৎসাবিজ্ঞানে মারিজুয়ানা বা গাঁজা মূলত চিকিৎসক-প্রস্তাবিত ভেষজ থেরাপি হিসাবে গাঁজা উদ্ভিদের ব্যবহার বোঝায়, যা ইতোমধ্যে কানাডা, বেলজিয়াম, অস্ট্রেলিয়া, নেদারল্যান্ড, স্পেন, এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৩২টি রাজ্যে স্থান করে নিয়েছে।
প্রভাব
গাঁজার প্রধান স্বল্পমেয়াদী শারীরিক প্রভাব
গাঁজার সেবনের সাইকোঅ্যাক্টিভ এবং শারীরবৃত্তীয় নানান প্রভাব রয়েছে।
গাঁজার তাৎক্ষণিক গ্রাসকারী প্রভাবের মধ্যে শিথিলায়ন এবং হালকা রমরমা মেজাজ অন্তর্ভুক্ত (“উচ্চ” বা “স্টোন্ড” অনুভূতি), কিছু তাৎক্ষণিক অবাঞ্ছিত পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে স্বল্পমেয়াদী স্মৃতি হ্রাস, মুখগহ্বর শুষ্কতা, অনভিজ্ঞ করে তোলা, চোখ লাল হওয়া প্রভৃতি।
পাশাপাশি বোধ এবং মেজাজ বা মানসিক অবস্থার বিষয়ী পরিবর্তন, সর্বাধিক সাধারণ স্বল্পমেয়াদী শারীরিক ও স্নায়বিক প্রভাবের মধ্যে হৃদস্পন্দন বৃদ্ধি, ক্ষুধা বৃদ্ধি ও অতিরিক্ত খাদ্য গ্রহণ, নিম্ম রক্তচাপ, স্বল্পমেয়াদী এবং কর্ম স্তৃতির অবনতি, মানসিক সমন্বয় এবং একাগ্রতা অর্ন্তভূক্ত।
তথ্যসূত্র wikipedia.org
Leave a comment
You must be logged in to post a comment.