জাম
জাম (ইংরেজি: Jambul, Malabar plum),( হোমিওপ্যাথি ঔষধ সিজিজিয়াম জ্যাম্বোলেনাম – Syzygium jambolanum ) বৈজ্ঞানিক নাম Syzygium cumini, Myrtaceae পরিবারভুক্ত একটি ফল। এটি দেখতে ১ থেকে ২.৫ সেন্টিমিটার লম্বা, প্রায় আয়তাকার। গাছ ১৪ থেকে ৬০ ফুট বা এর বেশিও লম্বা হতে পারে। পাতা সরল, বড়, চামড়া পুরু এবং চকচকে। গাছ চির সবুজ। চকচকে পাতা এবং চিরসবুজ হবার কারণে এর আলংকরিক মান বেশ ভালো।
জাম নানা দেশে নানা নামে পরিচিত, যেমন- জাম্বুল, জাম্ভুল, জাম্বু, জাম্বুলা, জাভা প্লাম, জামুন, কালোজাম, জামব্লাং, জাম্বোলান, কালো প্লাম, ড্যামসন প্লাম, ডুহাট প্লাম, জাম্বোলান প্লাম, পর্তুগিজ প্লাম ইত্যাদি। তেলেগু ভাষায় একে বলা হয় নেরেদু পান্ডু, মালায়ালাম ভাষায় নাভাল পাজহাম, তামিল ভাষায় নাভা পাজহাম এবং কানাড়া ভাষায় নেরালে হান্নু। ফিলিপাইনে একে বলা হয় ডুহাট।
জাম গাছে মার্চ এপ্রিলে ফুল আসে। জামের ফুল ছোট এবং ঘ্রানওয়ালা। মে জুন মাসে ফল বড় হয়। ফলটি লম্বাটে ডিম্বাকার। শুরুতে এটি সবুজ থাকে যা পরে গোলাপী হয় এবং পাকলে কালো বা কালচে বেগুনি হয়ে যায়। এটি খেলে জিহ্বা বেগুনি হয়ে যায়।
বিস্তার
জাম ভারতবর্ষ থেকে সারা দুনিয়াতে ছড়িয়েছে এবং বর্তমানে এটি সাবেক বৃটিশ উপনিবেশগুলোতে বেশ দেখা যায়। বাংলাদেশে প্রধানত দুই জাতের জাম পাওয়া জায়। জাতগুলি হলো ক্ষুদি– খুব ছোট জাত এবং মহিষে– বেশ বড় ও মিষ্টি। এটি বর্ষাকালে পাওয়া যায়। ফলের গা কালো এবং খুব মসৃণ পাতলা আবরণ দিয়ে ঢাকা। ফলের বহিরাবরণের ঠিক নিচ থেকেই গাঢ় গোলাপী রংয়ের টক মিষ্টি শাস।
ব্যবহার
জামের প্রধান ব্যবহার খাদ্য হিসেবে। টক মিষ্টি সুস্বাদু এই ফলটি বেশ জনপ্রিয়। কবিরাজী বা হেকিমী চিকিৎসায় এর কিছু ব্যবহার আছে; বিভিন্ন রোগ নিয়ন্ত্রণের জন্য বাংলাদেশ, ভারতবর্ষ, ইন্দোনেশিয়া এবং চীন-এ জামের ব্যবহার হয়ে আসছে। জামের বীজ দিয়ে নানান রোগের আয়ুর্বেদী চিকিৎসা করা হয়, যেমন বহুমুত্র। ) ইউনানী এবং চৈনিক চিকিৎসাতেও এর ব্যবহার আছে। হজমের সমস্যা, উচ্চ রক্তচাপ, মাড়ির প্রদাহ ইত্যাদি রোগে জামের বীজ, ছাল ও পাতা ব্যবহৃত হয়। জাম থেকে মদ ও সিরকা তৈয়ার করা যায়। জামে বেশি পরিমাণে ভিটামিন এ এবং সি আছে।
পুষ্টিমান ও রাসায়নিক উপাদান
প্রতি ১০০ গ্রাম (৩.৫ আউন্স) পুষ্টিগত মান | |
---|---|
শক্তি | ২৫১ কিজু (৬০ kcal) |
শর্করা
|
15.56 g
|
স্নেহ পদার্থ
|
0.23 g
|
প্রোটিন
|
0.72 g
|
ভিটামিনসমূহ | |
ভিটামিন এ | 3 IU |
থায়ামিন (বি১) |
(1%)
0.006 mg |
রিবোফ্লাভিন (বি২) |
(1%)
0.012 mg |
ন্যায়েসেন (বি৪) |
(2%)
0.260 mg |
প্যানটোথেনিক অ্যাসিড (বি৫)
|
(3%)
0.160 mg |
ভিটামিন বি৬ |
(3%)
0.038 mg |
ভিটামিন সি |
(17%)
14.3 mg |
চিহ্ন ধাতুসমুহ | |
ক্যালসিয়াম |
(2%)
19 mg |
লোহা |
(1%)
0.19 mg |
ম্যাগনেসিয়াম |
(4%)
15 mg |
ফসফরাস |
(2%)
17 mg |
পটাশিয়াম |
(2%)
79 mg |
সোডিয়াম |
(1%)
14 mg |
অন্যান্য উপাদানসমূহ | |
পানি | 83.13 g |
|
|
Source: http://ndb.nal.usda.gov/ndb/search/list |
জাম পাতার উপাদান নিচের ছকে দেয়া হলো।
জাম পাতা | |
---|---|
Compound | Percent |
আমিষ | 9.1 |
স্নেহ | 4.3 |
আঁশ | 17.0 |
ছাই | 7 |
ক্যালসিয়াম | 1.3 |
ফসফরাস | 0.19 |
Source: http://www.hort.purdue.edu/newcrop/morton/jambolan.html |
Leave a comment
You must be logged in to post a comment.