গর্ভকালীন বমি বমি ভাব রোগের হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা
Pregnancy, nausea & vomiting in (গর্ভকালীন বমিবমি ভাব এবং বমি) :- কোন নারী গর্ভধারনের পর তার শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ প্রতঙ্গে যে-সব প্রতিক্রিয়া দেয়, তার মধ্যে পাকস্থলী বা পেটের উৎপাত একটি সাধারণ ঘটনা। পেটের সমস্যাগুলির মধ্যে ক্ষুধা বৃদ্ধি পাওয়া, বমিবমি ভাব, বমি হওয়া, মুখে পানি উঠা, এসিডিটি বা বুকজ্বালা, টক ঢেকুর ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। বিশেষত বমিবমি ভাব ও বমি’র সমস্যাটি নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে মা ও শিশুর জীবন নিয়ে টানাটানি পড়ে যেতে পারে। এই সমস্যাটির মাত্রা অবস্থাভেদে কম-বেশি হতে দেখা যায়। আমাদের দেশের মেয়েদের মধ্যে একটি বিশ্বাস প্রচলিত আছে যে, গর্ভাবস্থায় বমিবমি ভাব কম হলে গর্ভস্থ শিশু মেয়ে হবে আর বমিবমি ভাব বেশী হলে শিশু ছেলে হবে। বিষয়টি কতটা প্রমাণিত সত্য তা জানি না। এজন্য বমির সমস্যা বেশী হলেই বরং মেয়েরা বেশী খুশি হয়, কেননা কিছুদিন পরই সে পুত্র সন্তানের মা হতে যাচ্ছে ভাবখানা এই রকম।
সে যাক, কুসংস্কার নিয়ে আলোচনা করা আমাদের বিষয় নয়। গর্ভকালীন সময়ে বমিবমি ভাব ও বমি’র সমস্যাটি সাধারণত প্রথম পাঁচ মাসের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে। এই সমস্যাটি যখন খুবই মারাত্মক আকার ধারণ করে, তখন তাকে hyperemesis gravidarum বলা হয়। এই পরিস্থিতিকে এলোপ্যাথিক ডাক্তাররা ঔষধে সামলাতে ব্যর্থ হলে গর্ভ খালাস করে দেয় অর্থাৎ শিশুকে মেরে মাকে বাঁচায়। কিন্তু হোমিওপ্যাথিতে ইনশায়াল্লাহ্ নরহত্যার কোন প্রয়োজন পড়ে না। আমাদের ঔষধ এতটাই শক্তিশালী যে, ছুরি-চাকুর কাজ সে কেবল ঔষধের মাধ্যমেই অনায়াসে সেরে ফেলতে পারে। গর্ভাবস্থায় বমিবমি ভাব ও বমি’র সমস্যাটি নিয়ন্ত্রণের সবচেয়ে কাযর্কর ঔষধগুলো হচ্ছে আর্সেনিক, ইপিকাক, মেডোরিনাম, ক্রিয়োজোট, নাক্স ভমিকা এবং পালসেটিলা।
* বার্নেটের মতে, গর্ভকালীন বমির সমস্যার সবচেয়ে ভালো ঔষধ হলো Medorrhinum এবং এটি সাধারণত এক মাত্রা খাওয়াই যথেষ্ট। ক্ষেত্র বিশেষে পনের দিন পর পর কয়েক মাত্রা খাওয়া লাগতে পারে।
* অধিকাংশ ক্ষেত্রে Ipecac ঔষধটাতেই ভালো ফল পাওয়া যায়।
* যদি এমন হয় যে, কেবল খাবারের গন্ধে বা রান্নার গন্ধ পেলেই বমিবমি ভাব আসে, সেক্ষেত্রে Colchicum autumnale হলো উপযুক্ত ঔষধ। অবশ্য এই লক্ষণে Arsenic album ঔষধটিও খাওয়াতে পারেন, যদি অস্থিরতা ও জ্বালাপোড়া ভাব থাকে। পরিস্থিতির গুরুত্ব অনুযায়ী ঘণ্টায় ঘণ্টায় বা দিনে তিনবেলা করে খেতে পারেন যতদিন সমস্যা থাকে। কারো কারো ক্ষেত্রে সকালে ঘুম থেকে উঠার পর সমস্যাটি দেখা দেয়। সেক্ষেত্রে ঘুম থেকে উঠে সাথে সাথে একমাত্রা ঔষধ খেয়ে নিতে পারেন।
* বমিবমি ভাবের সাথে কারো মধ্যে আবার বুকজ্বালা বা পেটে গ্যাসের সমস্যা থাকতে পারে। এক্ষেত্রে Ipecac-এ ভালো ফল না হলে পরিবর্তে Nux vomica দিতে পারেন। কিংবা ইপিকাক এবং নাক্স ভমিকা এক সাথেও দিতে পারেন বা একবার ইপিকাক-একবার নাক্স ভমিকা এভাবেও দিতে পারেন। পেট-ফাঁপা সমস্যার জন্য লক্ষণ মিললে Pulsatilla বা Carbo veg দিতে পারেন। এসব সমস্যা বাচ্চাকে স্তন্যদানের সময় দেখা দিলেও একই পন্থা অবলম্বন করুন।
[ ভাল লাগলে পোস্টে অবশ্যই কমেন্ট বা শেয়ার করুন , শেয়ার বা কমেন্ট দিলে আমাদের কোনো লাভ অথবা আমরা কোনো টাকা পয়সা পাই না, কিন্তু উৎসাহ পাই, তাই অবশ্যই শেয়ার করুন । ]
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন