মায়ের বুকের দুধ কম পাচ্ছে শিশু ?
দুধ হল স্তন্যপায়ী প্রাণীর দুগ্ধগ্রন্থি থেকে উৎপন্ন এক প্রকার সাদা তরল। অন্যান্য খাদ্য গ্রহণে সক্ষম হয়ে ওঠার আগে এটিই হল স্তন্যপায়ী প্রানীদের ( শিশু ) পুষ্টির প্রধান উৎস। স্তন থেকে দুগ্ধ নিঃসরণের প্রাথমিক পর্যায়ে শাল দুধ উৎপন্ন হয়, যা শিশুর দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়ক। নবাগত শিশুর জন্য ভালো প্রাকৃতিক খাবার হলো মায়ের বুকের দুধ। বুকের দুধ শিশুর পরিপূর্ণ পুষ্টির চাহিদার জোগান দেয়। শিশু জন্মের পর প্রথম ছয় মাস তাকে কেবল বুকের দুধ খাওয়ানোর পরামর্শই দেন চিকিৎসকরা। কোন কারনে মায়ের বুকের দুধ শিশু কম পেলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন । হোমিওপ্যাথিতে এর ভালো চিকিৎসা আছে । আমার জানা মতে এর সমাধান কয় এক দিনের মধ্যেই পাওয়া যায় ।
গবাদি পশু থেকে প্রাপ্ত কাচা দুধের পুষ্টির পরিমাণ বিভিন্ন প্রাণীর ক্ষেত্রে ভিন্ন হলেও তাতে প্রচুর পরিমাণে সম্পৃক্ত স্নেহ পদার্থ, প্রোটিন, ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন সি পাওয়া যায়। আবার গরুর দুধ হল সামান্য অম্লজাতীয়।
মা যদি পুষ্টিমানযুক্ত খাবার খায় তাহলে শিশু পর্য়াপ্ত পরিমানে দুধ পাবে। এজন্য প্রসবের ঠিক পর পরই হালকা তরল জাতীয় খাবার দরকার। দুধ, শরবত, বিস্কুট, মিষ্টি এসব দেয়া যেতে পারে। এছাড়া অন্যান্য স্বাভাবিক খাবার ভাত, ডাল, শাক-সবজি, মাছ, মাংস, ডিম, দুধ, ফল খাওয়ানো যাবে। এ সময় ফল-ফলাদির মধ্যে আম, কলা, আতা, পেপে, আপেল খেতে পারবে। জেনে বা না জেনে মায়ের দুধ না খাইয়ে আমরা অনেকেই গরু, মহিষ, ছাগল কিংবা ডিবির দুধ শিশুকে খাইয়ে থাকি। নিচের সারনির দিকে তাকালে বোঝা যাবে আসলে গুনগত উপাদানে কোনটি সেরা। (প্রতি ১০০ গ্রাম হিসাবে)
উপাদান | গরু | মহিষ | ছাগল | কৌটা | মায়ের দুধ |
প্রোটিন | ৩.৫০ | ৩.৬০ | ৩.৫০ | ২.৪৪ | ৩.১০ |
ল্যাকটোজ | ৪.৮০ | ৫.৫০ | ৪.৩০ | ৮.১৯ | ৭.৩০ |
ক্যালসিয়াম | ১২০ | ২১০ | ১৭০ | ১.৪ | ২৮ |
ফসফরাস | ৯০ | ১৩০ | ১২০ | ৬৯ | ৯৫ |
আয়রন | ০.২ | ০.২ | ০.৩ | ১.২ | ১.৪ |
চর্বি | ৩.৮০ | ৭.০০ | ৪.০০ | ৩৮৬ | ৩.১০ |
এনার্জি | ৬৭ | ১১৭ | ৭২ | ৭১.৫ | ৬৫ |
অনেকে বলতে পারেন, মায়ের দুধের চেয়ে গরু, মহিষের দুধে ক্যালসিয়ামের পরিমান বেশী তা হলে গরুর দুধই তো বেশী ভালো ।
তাদের কাছে আমার প্রশ্ন : আমারা যে খাবার লবন খাই তাতে প্রচুর পরিমান আয়োডিন (আয়োডিনের অভাবে গলগন্ড রোগ হয়) থাকে ।ক্যানো তাহলে খাবার খেতে বসে অনেক সময় বলেন খাবারে লবন বেশী হয়েছে ?এই তিতা খাবার খাবো কি ভাবে ?
লবন শরীরের জন্য দরকারী । তাহলে লবন বেশী করে খান । তিতা খাবার বলে চিল্লা-পাল্লা করেন ক্যান?
পত্যেকটা জিনিসের সঠিক পরিমান আছে । মানব শিশু জন্মের পর ওজন কতো হয়? আর গরুর বাচ্চা (বাছুর) জম্নের পর ওজন কতো হয় ? অবশ্যই ওজনে বিশাল পার্থক্য । । আশা করি বুঝতে পেরেছেন ।
সৃষ্টিকর্তা অবুঝ ও অসহায় শিশুর জন্য মাপ ঝোপ ঠিক রেখে মায়ের বুকে, শিশুর জন্য দুধ পান করার ব্যবস্থা করেছেন । যে খাবারের সাথে অন্য খাবারের তুলনা হয় না ।
শিশু যদি প্রথম দিকে দুধ না খেতে চায়, তাহলে প্রয়োজনে মা হাত দিয়ে চেপে সামান্য দুধ শিশুর ঠোঁটে দিতে পারেন। বোঁটার ছোঁয়া শিশুর মুখে লাগলে দুধ খুঁজতে হাঁ করবে। মুখ বেশ খানিকটা হাঁ হলেই খেতে দিতে হবে।
অনেক সময় শিশু একটু কম দুধ পায়, বলে অতিরিক্ত কান্নাকাটি করে। এর জন্য আমি দেখতে পাই বহু চিকিৎসক একটি চিরকুট লিখে দেয় যে ঐই দুধ কিনে এনে খাওয়ান। এটা একটা বাজে অভ্যাস এবং খারাপ দিকও বটে । আমি মনে করি মায়ের দুধের বিকল্প হয় না ! তবে অনেক সময় মায়ের বিভিন্ন শারীরিক সমস্যার কারনে বুকের দুধ খাওয়াতে নিষেধ করা হয় । যেমন :- স্তন টিউমার, স্তনের ক্যান্সার, এইডস ইত্যাদি । হোমিওপ্যাথিতে এর ভালো চিকিৎসা আছে । আমার জানা মতে এর সমাধান কয় এক দিনের মধ্যেই পাওয়া যায় ।
বাচ্চার কান্না মায়ের দুগ্ধ উৎপন্নে সাহায্য করে।
মানবশিশুকে অনেক সময় টাটকা ছাগলের দুধ খাওয়ানো হয়ে থাকে। কিন্তু এই পদ্ধতি অবলম্বনের ফলে শিশুর বিভিন্ন শারীরিক অসুস্থতার শিকার হওয়ার ঝুঁকি থেকে যায়।
পোষ্টটি লেখা লেখি অবস্থায় আছে ।……………………………………..
[ ভাল লাগলে পোস্ট টি অবশ্যই কমেন্ট বা শেয়ার করুন , শেয়ার বা কমেন্ট দিলে আমাদের কোনো লাভ অথবা আমরা কোনো টাকা পয়সা পাই না, কিন্তু উৎসাহ পাই, তাই অবশ্যই শেয়ার করুন । ]
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন