Category Archives: মৃগীরোগ

মৃগী রোগ বা খিঁচুনি (তড়কা, আক্ষেপ, সন্ন্যাস রোগ) হলো মস্তিষ্কের বৈদ্যুতিক গোলযোগ (হতে পারে লোড শেডিং কিংবা ভল্টেজের উঠানামা) যাতে আক্রান্ত ব্যক্তি কিছু সময়ের জন্য তার চেতনা হারিয়ে ফেলে এবং শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে খিচুঁনি / আক্ষেপ (convulsion) দেখা দেয়। যাতে সারা শরীর ধনুকের ন্যায় বাঁকা হয়ে যায়, গোঙানি বা অনিচ্ছাকৃত চীৎকার করতে থাকে, হাত-পা-আঙ্গুল ক্রমাগত বাঁকা এবং সোজা হতে থাকে, দাঁত দিয়ে জিহ্বা কামড়ে ধরে, মুখ দিয়ে ফেনা বের হতে থাকে, অনিচ্ছাকৃতভাবে মল-মুত্র বের হয়ে যাওয়া এবং শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ হয়ে যায় (grand mal seizure)।

মৃগীর আক্রমণ শেষ হওয়ার পরে সাধারণত রোগী দুর্বল হয়ে পড়ে এবং গভীর ঘুমে ডুবে যায়। রোগের আক্রমণের সময় সে যা যা করেছে, তার কিছুই মনে করতে পারে না। মৃগীরোগের আরো যে-সব লক্ষণ প্রকাশ পায় তা হলো চোখে উল্টাপাল্টা দেখা, কানে উল্টাপাল্টা কিছু শোনা, অল্প সময়ের জন্য আচার-আচরণ পরিবর্তন হওয়া, নির্দিষ্ট একটি অঙ্গে ঝাকুনি দেওয়া, হঠাৎ করে ঘামতে থাকা, এক মুহূর্তের জন্য জ্ঞান হারিয়ে ফেলা, বমিবমি লাগা, অকারণে ভয় ভয় লাগা, উপরের দিকে আড়চোখে তাকানো, মুখের পেশীর সঙ্কোচন্তপ্রসারণ ইত্যাদি ইত্যাদি (petit mal seizure)। কিছু কিছু ক্ষেত্রে মাথায় আঘাত পাওয়া, মসি-ষ্কে ইনফেকশান, ব্রেন টিউমার, রক্তনালীর রোগ, মাদকাসক্তি, শরীরে খনিজ লবণের ভারসাম্যহীনতা, সীসার বিষক্রিয়া প্রভৃতি কারণে মৃগী রোগ হতে দেখা যায়। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মৃগী রোগের পেছনে কোন কারণ খুঁজে পাওয়া যায় না। মৃগীর আক্রমণ দুয়েকদিন পরপর হতে পারে আবার অনেক বছর পরপরও হতে পারে; তবে বিষয়টি চলতে থাকে সারা জীবন ধরে। এমনকি ঘুমের মধ্যেও ইহার আক্রমণ হতে পারে। সাধারণত শারীরিক উত্তেজনা, উজ্জ্বল আলোর ঝলকানি, হঠাৎ প্রচণ্ড শব্দ শোনা, আবেগ-উত্তেজনা ইত্যাদির ফলে মৃগীর আক্রমণ শুরু হয়।

কোন কোন রোগী কিছু সতর্কীকরণ লক্ষণের (aura) মাধ্যমে বুঝতে পারে যে, এখনই মৃগীর আক্রমণ শুরু হতে যাচ্ছে ; আবার অনেক রোগীই সতর্কীকরণ লক্ষণ না পাওয়ায় আগেভাগে বুঝতে পারে না। সতর্কীকরণ লক্ষণের মধ্যে আছে ভয় লাগা, পেটের মধ্যে অস্বস্তি লাগা, চোখে সর্ষে ফুল দেখা, মাথাঘুরানি, অদ্ভূত গন্ধ পাওয়া ইত্যাদি। অধিকাংশ ক্ষেত্রে মৃগীর আক্রমণ হয় অল্প সময়ের জন্য। অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের খিচুঁনি থাকতেও পারে আবার না ও থাকতে পারে, কিছু সময়ের জন্য ঝিমানি আসে অথবা মাথা এলোমেলো-হতবুদ্ধি হয়ে যায়। বিভিন্ন ধরণের লক্ষণের উপর ভিত্তি করে মৃগী রোগকে কয়েকটি ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হয়ে থাকে। মৃগীর আক্রমণ হলে তাতে হস্তক্ষেপ করা যাবে না; তবে রোগী যাতে আগুনে পুড়ে, পানিতে ডুবে অথবা ধারালো কোন অস্ত্রের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। পাশাপাশি রোগীর শ্বাস নিতে অসুবিধা হলে মুখের ফেনা পরিষ্কার করে, জিহ্বা নাড়াচাড়া করে, রোগীর মাথায় বালিশ দিয়ে, রোগীকে সুবিধামতো কাত-চিৎ করে ইত্যাদির মাধ্যমে শ্বাস নিতে সাহায্য করতে হবে।

এই রোগীদের আগুনের কাছে বা পানিবদ্ধ স্থানে একাকী অবস্থান করা বিপজ্জনক। সর্বদা সাথে একটি ডাক্তারী সার্টিফিকেট বা ‘মৃগী রোগী’ লেখা একটি লকেট গলায় ঝুলিয়ে রাখা উচিত। মৃগীর আক্রমণ যদি পাঁচ মিনিটের বেশী স্থায়ী হয় অথবা জ্ঞান ফিরার পূর্বেই আবার খিচুঁনি শুরু হয় কিংবা খিচুঁনি শেষ হওয়ার পরেও রোগী বেহুশ হয়ে পড়ে থাকে, তবে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। নিয়মিত ব্যায়াম করা, প্রচুর বিশ্রাম নেওয়া এবং মানসিক চাপমুক্ত থাকা মৃগীর উৎপাত কমাতে যথেষ্ট সাহায্য করে। রোগের অন্তর্নিহিত কারণটি সনাক্ত করতে পারলে এবং সে অনুযায়ী সঠিক হোমিও ঔষধ প্রয়োগ করা গেলে, মৃগী রোগ সম্পূর্ণ স্থায়ীভাবে নিরাময় করা সম্ভব। অন্যথায় ঔষধ প্রয়োগে কেবল রোগের তীব্রতা কমিয়ে রাখা যাবে। (বিঃ দ্রঃ- মৃগী রোগ ছাড়াও অন্য যে-কোন কারণেই খিচুঁনি হোক না কেন, তাতে এই অধ্যায়ে বণিত ঔষধগুলোর কোন একটি লক্ষণ মিলিয়ে খাওয়াতে থাকুন।)একই ঔষধ দীর্ঘদিন না খেয়ে বরং লক্ষণ অনুযায়ী কয়েকটি ঔষধ সিলেক্ট করে একটির পর আরেকটি ঘুরিয়ে ফিরিয়ে খান।

Cimicifuga – সিমিসিফিউগার

সিমিসিফিউগার প্রধান প্রধান লক্ষণ হলো গোমড়ামুখ, দুঃখবোধ, নিদ্রাহীনতা, ভয় পায় সে মনে হয় পাগল হয়ে যাবে, কেউ আঘাত করবে অথবা প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ভয় করে, মনে হয় সবকিছুকে একটি কালো পর্দা ঢেকে দিয়েছে ইত্যাদি।

Cimicifuga – সিমিসিফিউগার সতর্কীকরণ লক্ষণ (aura) হলো মাথার ভেতরে ঢেউ খেলানোর অনুভুতি হওয়া।অন্যান্য লক্ষণের মধ্যে আছে বিষন্নতা বা মনমরা ভাব, ঘাড়ের পেছনে ব্যথা, বিভিন্ন জয়েন্টে বাতের সমস্যা বেশী হওয়া ইত্যাদি।

Cimicifuga – (মাসিক বন্ধ থাকা, ঋতুস্রাব না হওয়া) এটি নার্ভাস ধরণের মহিলাদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য বিশেষত যারা ঘন ঘন বাতের ব্যথায় আক্রান্ত হয়ে থাকেন। মনে আনন্দ নাই এবং সবকিছুরই খারাপ দিকটা আগে চিন্তা করেন।

সরাসরি online থেকে ঔষধ ক্রয় করুন !

Hyoscyamus niger – হায়োসায়েমাস

হায়োসায়েমাসের প্রধান প্রধান লক্ষণগুলো হলো মুখের পেশীতে খিচুঁনি বেশী হওয়া,অট্টহাসি-চীৎকার-হৈহুল্লোর করতে ইচ্ছে হওয়া, দুঃখবোধ, মানুষকে সন্দেহ করা, নগ্ন হওয়ার ইচ্ছা ইত্যাদি।

Hyoscyamus niger – মানসিক অসুস্থতার সাথে অশ্লীল কথা, গান বা অঙ্গভঙ্গি, গায়ের কাপড় ফেলে দেয়া বা যৌনাঙ্গ প্রদর্শন করা, একা থাকতে ভয়, অন্যরা তাকে কামড়াবে বা বিষপ্রয়োগে হত্যার ভয়, কিছু দিলে নিতে অস্বীকার করা, সবাই তার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করতেছে, পানিভীতি ইত্যাদি লক্ষণে হায়োসাইয়েমাস ঔষধটি অব্যর্থ। ২০০ শক্তি থেকে খাওয়ানো শুরু করে ক্রমান্বয়ে উচ্চশক্তিতে যান।

 

 

সরাসরি online থেকে ঔষধ ক্রয় করুন !