মাইগ্রেন কী ? কেন হয় ? লক্ষণ ও সমাধান !
মাইগ্রেন কী?
মাইগ্রেন এক বিশেষ ধরনের মাথাব্যথা। মাথার যে কোনো এক পাশ থেকে শুরু হয়ে অনেক সময় পুরো মাথায় ব্যথা করে।মাথার কোনো এক পাশে প্রচণ্ড ব্যথা, বমি ভাব বা বমি, চোখে ঝাপসা দেখা ইত্যাদি সমস্যা, এ সময় মানুষকে প্রায় শয্যাশায়ী করে ফেলে। এতে মস্তিষ্কে স্বাভাবিক রক্তপ্রবাহ ব্যাহত হয়। মস্তিষ্কের বহিরাবরণে যে ধমনিগুলো আছে, সেগুলো মাথাব্যথার শুরুতে স্ফীত হয়ে যায়। অল্প পরিমানে পানি পানের কারণে সৃষ্ট ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতা এবং দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকার কারণে রক্তে শর্করা কমে যাওয়া মাইগ্রেনের ব্যথাকে জাগিয়ে দেয়।
দষ্টিস্বল্পতা, মস্তিষ্কের টিউমার, মাথায় অন্য সমস্যার কারণে মাথাব্যথা হতে পারে।এ ছাড়া নিয়াসিন ও ভিটামিন বি কমপ্লেক্সের অভাব ঘটলে এবং রক্তস্বল্পতার কারণেও মাথাব্যথা বাড়ে। মাইগ্রেন একধরনের প্রাইমারি হেডেক, যা নিয়মিত চিকিৎসার মাধ্যমে নিরাময় সম্ভব। মাইগ্রেনের ব্যথা চোখের কোনো সমস্যার জন্য হয় না। তবে দাঁতের ,চোখ ও কানের সমস্যা থেকে মাথা ব্যথা হতে পারে ৷ মনে রাখবেন সব মাথাব্যথাই মাইগ্রেন নয়।
মাইগ্রেন কেন এবং কাদের বেশি হয়?
সাধারণত ২০ থেকে ৩০ বছর বয়সে এই রোগ শুরু হয়। বর্তমানে বিশ্বে প্রায় ১১ শতাংশ বয়স্ক মানুষ মাইগ্রেন জনিত মাথাব্যথায় ভোগেন। তবে এটি বংশগত বা অজ্ঞাত কোনো কারণে হতে পারে। নারীদের ঋতুস্রাবের সময় মাথাব্যথা বাড়ে। চকলেট, পনির, কফি ইত্যাদি বেশি খাওয়া, জন্মবিরতি করণ ওষুধ, দুশ্চিন্তা, অতিরিক্ত ভ্রমণ, ব্যায়াম, অনিদ্রা, অনেকক্ষণ টিভি দেখা, দীর্ঘসময় কম্পিউটারে কাজ করা, মোবাইলে কথা বলা ইত্যাদির কারণে এ রোগ হতে পারে।এটি সাধারণত পুরুষের চেয়ে নারীদের বেশি হয়।
মাইগ্রেন লক্ষণ ?
হঠাৎ করে শুরু হতে পারে মাইগ্রেনের ব্যথা। মাথা ব্যথা, বমি ভাব এ রোগের প্রধান লক্ষণ। তবে অতিরিক্ত হাই তোলা, কোনো কাজে মনোযোগ নষ্ট হওয়া, বিরক্তিবোধ করা ইত্যাদি উপসর্গ মাথা ব্যথা শুরুর আগেও হতে পারে। মাথাব্যথা শুরু হলে তা কয়েক ঘণ্টা, এমনকি কয়েক দিন পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে।মানসিক চাপ, দুশ্চিন্তা, কোষ্ঠকাঠিন্য, অতি উজ্জ্বল আলো এই রোগকে বাড়িয়ে দেয়।মাথার যেকোনো অংশ থেকে এ ব্যথা শুরু হয়। পরে পুরো মাথায় ছড়িয়ে পড়ে | চোখের পেছনে ব্যথার অনুভূতি তৈরি হতে পারে।
কোন ধরণের খাবার খেলে ব্যথা শুরু/বেশি হয়
একেক জনের একেক ধরণের খাবারের কারণে মাইগ্রেইনের ব্যথা শুরু হয়। আপনার কোন খাবারের কারণে মাইগ্রেইনের ব্যথা শুরু হয় তা বিশ্লেষণ করে বের করতে পারবেন।মাইগ্রেইনের ব্যথা শুরু করে এমন খাবারগুলো এড়িয়ে চললে, যেমন চা, কফি ,কোমলপানীয়, চকলেট, আইসক্রিম, দই, দুধ, মাখন, টমেটো, পেঁয়াজ, আপেল, কলা , চিনাবাদাম ও টক জাতীয় ফল ,গম জাতীয় খাবার, যেমন রুটি, পাস্তা, ব্রেড ইত্যাদি।
তবে ব্যক্তিভেদে ভিন্ন ভিন্ন খাবারে সমস্যা দেখা দিতে পারে।তবে কোন কোন খাবার কোন কোন পারি পার্শ্বিক ঘটনায় মাইগ্রেইন বাড়ছে বা কমছে আপনি নিজেই নিজের সমাধান পেয়ে যাবেন। সময়মত ঘুমালে এবং ভারসাম্যপূর্ণ জীবন যাপন করলে মাইগ্রেই থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
যেসব খাবার মাইগ্রেনের সমস্যা প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে
আপনার মাইগ্রেইন হয়ত কখনই পুরোপুরি ভাল হবে না, তবে কিছু বিবেচনা সিদ্ধান্তের কারণে জীবনের মান অনেক উন্নত হয়ে উঠতে পারে । প্রতিদিন তিনবার ভরপেট খাওয়ার চাইতে অল্প করে বেশ কয়েক বার খান যাতে রক্তচাপ কখনো কমে না যায়। চর্বিযুক্ত খাবার কম খান এবং শর্করা জাতীয় খাবার , কমলা, হলুদ,ও সবুজ রঙের শাকসবজি , ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি , ম্যাগনেশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার যেমন ঢেঁকি ছাঁটা চালের ভাত, আলু ও বার্লি । বিভিন্ন ফল, বিশেষ করে খেজুর ও ডুমুর, আদার টুকরো বা রস , তিল, আটা ও বিট ইত্যাদি বেশি বেশি খান। যা ব্যথা উপশম কর।
ম্যাগনেসিয়াম ও রিবোফ্লাবিন বা ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি-এর সাপ্লিমেন্ট
মাথা ব্যথা কমানোর কাজ করে। এগুলো সবুজ শাক সবজি এবং বাদামে পাওয়া যায়। প্রতিদিন ৮-১০ টি বাদাম খাওয়ার চেষ্টা করুন। আলু এবং লাল আটাতেও ম্যাগনেসিয়াম থাকে। দাঁত এবং হাড়ের অস্থুতার সাথে মাথা বথ্যার সম্পর্ক রয়েছে । তাই ভিটামিন ডি-এর পরিমাণ বাড়িয়ে দিন ।প্রতিদিন ১০০০ আইইউ ভিটামিন ডি শরীরের জন্য প্রয়োজন হলেও মেয়েদের ঋতুচক্র বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর এই চাহিদা ১২০০ আইইউ-তে গিয়ে পৌছায়। যেসব খাবারে ভিটামিন ডি রয়েছে সেগুলো হচ্ছে- মাশরুম, ডিমের কুসুম, চিজ বা পনির, দৈ, দুধ, কড লিভার অয়েল এবং গরুর কলিজা। আপনি একসাথে পাওয়া যায় ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি-এর সাপ্লিমেন্ট, খেয়েও দেখতে পারেন।
মাইগ্রেন থেকে রেহাই পাওয়ার কিছু উপায়
# মাইগ্রেন শুরু হয়ে গেলে প্রচুর পরিমাণে পানি পান কারণ , এই সময় ঠান্ডা কাপড় মাথায় জড়িয়ে রাখা উচিত।
# উচ্চশব্দ ও ঝনঝাট পূর্ণ পরিবেশে বেশিক্ষণ না থাকা।
# কম বা অতিরিক্ত আলোতে কাজ না করা।
# বেশি সময় ধরে কম্পিউটার ও টিভির সামনে না থাকা।
# প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে হবে এবং সেটা হতে হবে পরিপুন পরিমিত।
# তীব্র ঠান্ডা বা কড়া রোদ এরিয়ে চলতে হবে।
হোমিওপ্যাথীতে মাইগ্রেইনের ভাল চিকিৎসা আছে ।
সাস্থ্য ও চিকিৎসা বিষয়ে যে কোন প্রশ্ন থাকলে জানাতে পারেন !
ঔষধ এর জন্য যোগাযোগ করুন : 01951 53 53 53 ( বাংলাদেশ সময় সকাল ১০ টা থেকে বিকেল ৫ টা )
[ ভাল লাগলে পোস্ট টি শেয়ার করুন , শেয়ার বা কমেন্ট দিলে আমাদের কোনো লাভ অথবা আমরা কোনো টাকা পয়সা পাই না, কিন্তু উৎসাহ পাই, তাই অবশ্যই শেয়ার করুন । ]
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন