দাঁত সাদা করার প্রাকৃতিক টিপস ! দাঁত থাকুক ঝকঝকে সাদা আর হাসিতে ঝরুক মুক্তা !
একটি সুন্দর হাসি আমাদের সবার মন ভালো করে দেয়। আমরা অনেককেই বলতে শুনি হাসিতে তার মুক্তা ঝরে। এরকম মুক্তা ঝরানো হাসির জন্য সুন্দর, পরিষ্কার, দুর্গন্ধমুক্ত ও ঝকঝকে সাদা দাঁতের প্রয়োজন হয়। অনেকের দাঁত হলদে বা কালচে বর্ণের হয়ে থাকে। তারা এজন্য বিব্রতবোধ করে থাকেন। চলুন আজ জেনে নেই হলুদ দাঁত থেকে মুক্তির উপায়।
হলুদাভাব দাঁতের কারণ :
০১. বয়স হলে বিভিন্ন খনিজ পদার্থ ও ভিটামিন শোষণ ক্ষমতা কমে যেতে থাকে। তাই ক্যালসিয়াম শোষণ ক্ষমতা কমে যায়। ক্যালসিয়াম দাঁতের গঠনের একটি অন্যতম উপাদান। তাই ক্যালসিয়াম শোষণ ক্ষমতা কমে যাওয়ার ফলে দাঁতের শক্তি ও সুস্থ্যতা থাকেনা। দাঁতের রঙের পরিবর্তন হয়ে কালচে হতে থাকে।
০২. বিভিন্ন মানুষের দাঁতের রঙ বিভিন্ন ধরণের হয়। জেনেটিক কারণে অনেকের দাঁত হলুদাভাব হয়ে থাকে।
০৩. খাদ্যাভাস আমাদের দাঁতের রঙের উপর প্রভাব ফেলে। যেমন – চা , কফি, কোলা, সিগারেট, Acidic জুস। কিছু ওষুধ ও অতিরিক্ত রঙীন খাবার বেশি খেলে দাঁতের রঙ কালচে বা হলদে হয়ে যায়।
০৪. ধুমপান করলে ও জর্দা দিয়ে পান খেলে দাঁত কালচে বা লালচে বর্ণের হয়ে যায়। কারণ এতে নিকোটিন থাকে যা দাঁতের এনামেল নষ্ট করে দেয়।
০৫. কিছু রাসায়নিক পদার্থ ও ওষুধ দাঁতের রঙ পরিবর্তন করে।
০৬. ভালো ভাবে দাঁত ব্রাশ না করলেও দাঁতে হলদেভাব থাকে।
দাঁত সাদা করার উপায়ঃ
দাঁত সাদা করার জন্য অবশ্যই আপনাকে দাঁত পরিষ্কার রাখতে হবে। এজন্য যা করতে হবে তা হলো –
ব্রাশ – নিয়মিত ৩ বেলা খাবারের পরপরই ব্রাশ করতে হবে। ফ্লুরাইডযুক্ত টুথপেস্ট ব্যবহার করতে হবে। ব্রাশ ও টুথপেস্ট প্রতি ৩ মাস পরপর পাল্টাতে হবে।
ফ্লসিং – ব্রাশ করার পর অবশ্যই ফ্লস ব্যবহার করতে হবে। এতে দাঁতের ভেতরের আঁটকে থাকা খাবার বের হয়ে আসবে।
মাউথ ওয়াশ – একটি ভালো এন্টিসেপটিক মাউথ ওয়াশ দিয়ে কুলি করে নিবেন। এতে ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস হয়।
পানি পান করুন – প্রচুর পরিমাণে পানি পান করবেন যাতে মুখ ভেজা থাকে। পানি খাদ্যদ্রব্য মুখ থেকে ধুয়ে নিয়ে যায়। এতে খাবার আঁটকে থাকেনা। ফলে ব্যাকটেরিয়াও জন্মাতে পারেনা আর দাঁতে দুর্গন্ধ বা দাগ হয় না। আয়রনযুক্ত কলের পানি খাবেন না। এতে দাঁত হলুদ বা কালচে বর্ণ ধারণ করে।
এড়িয়ে চলবেন যেগুলো – কফি, চা, ধুমপান, মদ বর্জন করুন। অতিরিক্ত রঙীন খাবার খাওয়ার পরপরই দাঁত পরিষ্কার করুন।
কিছু প্রাকৃতিক টিপস দাঁত সাদা করার জন্যঃ
বেকিং সোডাঃ এটি দাঁত সাদা করতে অতুলনীয় –
– একটি ব্রাশ ভিজিয়ে নিয়ে তাতে বেকিং সোডা নিয়ে দাঁত মাজলে দাঁত হয় ঝকঝকে সাদা।
– লবণ ও ১ চিমটি বেকিং সোডা দিয়ে দাঁত মাজলে দাঁত সাদা হয়।
– এছাড়াও বেকিং সোডা ও হাইড্রোজেন পার অক্সাইড মিশিয়ে দাঁত মাজলে দাঁত সাদা হয়।
– সাদা দাঁতের জন্য ম্যালিক এসিড দরকার। এটি তৈরী করতে পারেন স্ট্রবেরী ও বেকিং সোডা দিয়ে। এরপর দাঁতে ঘষে নিয়ে ৫ মিনিট অপেক্ষার পর দাঁত ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে একদিন করতে পারেন।
এছাড়াও যা করতে পারেন –
০১. কাঠের কয়লা দিয়ে দাঁত মাজলে দাঁত সাদা হয়। তবে খেয়াল রাখতে হবে যে কাঁঠের কয়লাটি যেন জীবাণুমুক্ত থাকে এবং কয়লাটি মিহি গুঁড়ো করে নিতে হবে নাহলে দাঁত মাজতে গেলে ব্যথা লাগবে।
০২. লেবু ও লবণ মিশ্রণ – এক চিমটি লবণ ও কয়েক ফোঁটা লেবু দিয়ে দাঁত মাজলে দাঁত সাদা হয়।
০৩. কমলার খোসার ভেতরটা দিয়ে দাঁত ঘষলে দাঁত সাদা হয়।
০৪. স্ট্রবেরি খেলে দাঁত সাদা হয়। আজকাল আমাদের দেশেও এই ফলটি পাওয়া যায় অথবা ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল খেলে দাঁত সাদা থাকে।
০৫. আপেল সিডার ও সাদা ভিনেগার দিয়ে দাঁত মাজলে দাঁত সাদা হয়।
০৬. পুদিনা পাতা অনেক উপকারী। এটি দাঁত সাদা করে।
০৭. সুগার ফ্রি চিউইংগাম চিবোলে দাঁত সাদা হয়।
০৮.সবুজ চা তে প্রচুর ফ্লুরাইড থাকে। এছাড়া এটি এন্টি এসিডিক হওয়ার কারণে দাঁতে হলুদ রং পড়তে বাঁধা দেয়।
০৯.মাশরুম খান। এতে প্রচুর পরিমাণে পলিস্যাকারাইড থাকে। যা ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে ও ডেন্টাল প্লাক হতে দেয়না।
১০.এছাড়াও মেয়েরা তাদের দাঁত সাদা দেখানোর জন্য নীল বেজের লিপস্টিক ব্যবহার করতে পারেন।
জানলেন তো দাঁত কিভাবে সাদা রাখতে হয়! এবার একটি সুন্দর হাসি উপহার দিন প্রিয়জনকে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন