ফেসবুকে সুন্দরীদের প্রেমের আহব্বান : সাবধান !
বুধবার মুন্নি আক্তার নামের ফেসবুক আইডির ফাঁদে পা দেয়া এক যুবককে উদ্ধার করেছে নরসিংদী সদর থানা পুলিশ। সেই সাথে ৪ প্রতারক-অপহরণকারীকেও আটক করা হয়েছে। উদ্ধার হওয়া যুবক টংগী থেকে নরসিংদী এসেছিলেন মুন্নি আক্তারের সাথে দেখা করতে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মুন্নি অক্তার নামে ফেইসবুক আইডি ব্যবহার কারী সুমন মিয়া (২৩), হিমেল মিয়া (২৬),রাসেল (২২) ও সোহেল মিয়া (২২)।এঘটনায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে সদর মডেল থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এ ব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মো. শাহনেওয়াজ খালেদ বলেন,‘তথ্য প্রযুক্তি ব্যাবহার করে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে ফেসবুকে অল্প কয়েক দিনের পরিচয়ে এক জেলা থেকে অন্য জেলায় দেখা করার আগে ফেসবুক বন্ধু সম্পর্কে জেনে নেওয়া উচিত।এ ছাড়া বিকাশ একাউন্টের জন্য মোবাইল কোম্পানি গুলোকে সঠিক তথ্য সংরক্ষণ করা দরকার।’
বুধবার বিকেলে ৪টায় জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে ফেসবুক প্রতারনা নিয়ে চাঞ্চল্যকর ও অভিনব প্রতারনার কথা জানান, পুলিশ সুপার শেখ রফিকুল ইসলাম।
ঘটনার বিবরনে তিনি জানান, ফেসবুকে মেয়েদের ছবি ব্যবহার করে হ্যায়, হ্যালো দিয়ে শুরু। তারপর প্রেম নিবেদন। অবশেষে সরাসরি দেখা করার আহ্বান। আর দেখা করতে গেলেই অপহরণ করে দাবি করা হয় মুক্তিপন।
এমনই এক প্রতারক চক্রের চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে নরসিংদী সদর থানা পুলিশ। যারা অপহরণ করে মুক্তিপন দাবি করার এমনই এক অভিনভ পদ্ধতির কথা স্বীকার করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার শেখ রফিকুল ইসলাম আরও জানান, সম্প্রতি একটি চক্র ফেসবুকে মেয়েদের ছবি দিয়ে ফেইক একাউন্ট খুলে সাধারণ মানুষের সাথে প্রতরণা করে আসছে। প্রতারক চক্রের সদস্যরা উঠতি বয়সের যুবকদের টার্গেট করে প্রতারণার ফাঁদ পাতে। পরে মেয়ে কণ্ঠে কথা বলে প্রথমে প্রেমের অভিনয় ও পরে সাক্ষাতের আহ্বান জানায়। অপর প্রান্তের ডাকে সারা দিয়ে সাক্ষাত করতে আসলে প্রতারক চক্রের সদস্যরা অপহরণ করে মুক্তিপন দাবি করে। এরই ধারাবাহিকতায় প্রতারক চক্রের সদস্যরা মুন্নি অক্তার নামে ফেইক আইডি ব্যাবহার করে গাজীপুরের টংগী এলাকার হৃদয় মিয়াকে টার্গেট করে। পরে তাকে নরসিংদী এসে দেখা করার কথা বলে। হৃদয় মুন্নি আক্তারের সাথে দেখ করতে আসলে প্রতারক চক্রের সদস্য সোহেল, সুমন, রাসেল ও হিমেল তাকে অপহরণ করে। পরে তার পরিবারের কাছে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপন দাবি করে। অন্যাথায় মেরে ফেলের হুমকি দেয়। বিষয়টি পুলিশকে জানানো হলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মো. শাহনেওয়াজ খালেদের নেতৃত্বে শহরের ঘোড়াদিয়া এলাকা থেকে তাদের আটক করে। একই সাথে অপহৃত হৃদয়কে উদ্ধার করা হয়।
মুন্নি আক্তারের সাথে দেখা করতে আসা অপহৃত টংগীর হৃদয় মিয়া বলেন,‘গত ১৫ দিন যাবৎ মুন্নি আক্তারের সাথে ফেসবুকে কথা হচ্ছে। এর মধ্যে সে দেখা করার জন্য বললে আমি নরসিংদীতে আসি। আসার পরই সুমন ও সোহেল আমাকে মুন্নির সাথে দেখা করার কথা বলে একটি জঙ্গলে নিয়ে আটক করে পরিবারের কাছ থেকে মুক্তিপন দাবি করে। এরই প্রেক্ষিতে আমার পরিবার ২০ হাজার টাকা বিকাশের মাধ্যেমে পরিশোধ করেন। বাকি টাকার জন্য আমার উপর অমানুষিক নির্যাতন চালায়।’
Leave a comment
You must be logged in to post a comment.