ডেনমার্কের গ্রীণকার্ড পাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য জেনে নিন বিস্তারিত ।
পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ উন্নত জীবনের আশায় পাড়ি জমাচ্ছে উন্নত দেশগুলোতে। উত্তর ইউরোপের অন্যতম উন্নত দেশ ডেনমার্ক। প্রাকৃতিক নৈস্বর্গিক সৌন্দর্য্যের পাশাপাশি উন্নত নাগরিক জীবনের জন্য ডেনমার্ক সবার কাছে পরিচিত। ডেনমার্কের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে প্রচুর পরিমাণে দক্ষ জনশক্তি প্রয়োজন। উন্নত শিক্ষা ব্যবস্থা, সৌহার্দ্য পূর্ণ সামাজিক পরিবেশের জন্য পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে মানুষ ডেনমার্কে অভিবাসী হতে আগ্রহী। বাংলাদেশ থেকেও অনেকে ডেনমার্কে অভিবাসী হওয়ার জন্য আগ্রহী। ডেনমার্কের গ্রীণকার্ড পাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় বিষয়াদি আপনার জন্য নিম্নে তুলে ধরা হলো।যেখানে ডেনমার্কে ভিসা আবেদন করার পক্রিয়া, কে বা কারা পারবেন আবেদন করতে, কখন কোথায় ও কীভাবে আবেদন করবেন ইত্যাদি বিষয় গুলো রয়েছে।
পয়েন্ট তালিকাঃ
ডেনমার্কের গ্রীণকার্ড পাওয়ার জন্য একজন আবেদনকারীকে কমপক্ষে ১০০ পয়েন্ট অর্জন করতে হবে। শিক্ষা, ভাষা যোগ্যতা, কাজের অভিজ্ঞতা, বয়স ও অন্যান্য বিষয়ের উপর বিভিন্ন পয়েন্ট বরাদ্দ আছে। নিচে পয়েন্ট তালিকাটি দেওয়া হলো।
ব্যাচেলর ডিগ্রী – ৩০ পয়েন্ট
ব্যাচেলর ডিগ্রী+১ বছরের মাস্টার্স – ৫০পয়েন্ট
মাস্টার্স – ৬০ পয়েন্ট
পিএইচডি – ৮০ পয়েন্ট
আইইএলটিএস পয়েন্ট ৩.০০ – ৫ পয়েন্ট
আইইএলটিএস পয়েন্ট ৩.৫০ থেকে ৪.৫০ – ১০ পয়েন্ট
আইইএলটিএস পয়েন্ট ৫.০০ থেকে ৬.০০ – ১৫ পয়েন্ট
আইইএলটিএস পয়েন্ট ৬.৫ হলে- ২০ পয়েন্ট
১ থেকে ২ বছরের চাকুরীর অভিজ্ঞতা – ১০ পয়েন্ট
৩ থেকে ৫ বছরের চাকুরীর অভিজ্ঞতা – ১৫ পয়েন্ট
৩৫ বছর থেকে ৪০ বছর বয়সের ক্ষেত্রে – ১০ পয়েন্ট
৩৪ বছর বা তার নীচের বয়সের ক্ষেত্রে – ১৫ পয়েন্ট
১ বছরের শিক্ষা গ্রহণ EU/EEA *- তে – ৫ পয়েন্ট
৩ বছরের শিক্ষা গ্রহণ EU/EEA *– তে – ১০ পয়েন্ট
অথবা, ১ বছরের বৈধ বয়স EU/EEA* -তে (ধারাবাহিকভাবে ১২ মাস) – ৫ পয়েন্ট
২ বছরের বৈধ বসবাস ও কাজের অভিজ্ঞতা EU/EEA* – তে (ধারবাহিকভাবে ২ বছর) – ১০পয়েন্ট
নোট: EU – বলতে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোকে বুঝানো হয়েছে। যেমন – অস্ট্রিয়া, বেলজিয়াম, বুলগেরিয়া, সাইপ্রাস, গ্রীস, ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, ফ্রান্স, জার্মানি, হাঙ্গেরী, আয়ারল্যান্ড, ইতালি, লাটভিয়া, লিথুনিয়া, লুক্সেমবার্গ, স্লোভাকিয়া, স্লোভেনিয়া, স্পেন, সুইডেন, ইংল্যান্ড, রোমানিয়া, পর্তুগাল, পোল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস, মালটা, এস্টোনিয়া।
EEA – বলতে ইউরোপিয়ান ইকোনোমিক এরিয়ার অন্তর্ভুক্ত দেশগুলোকে বুঝানো হয়েছ। যেমন – অস্ট্রিয়া, বেলজিয়াম, বুলগেরিয়া, সাইপ্রাস, গ্রীস, ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, ফ্রান্স, জার্মানি, হাঙ্গেরী, আয়ারল্যান্ড, ইতালি, লাটভিয়া, লিথুনিয়া, লুক্সেমবার্গ, স্লোভাকিয়া, স্লোভেনিয়া, স্পেন, সুইডেন, ইংল্যান্ড, রোমানিয়া, পর্তুগাল, পোল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস, মালটা, এস্টোনিয়া, নরওয়ে, আইসল্যান্ড।
অনুমোদিত ও অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত পেশাসমূহঃ
ডেনমার্কের গ্রীণকার্ডের জন্য নিম্নোক্ত পেশার লোকজন অগ্রাধিকার পেয়ে থাকে।
১.একাউন্টেন্ট
২.এসোসিয়েট প্রফেসর
৩.বিল্ডিং ইঞ্জিনিয়ার
৪.কেমিস্ট
৫.কনস্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ার
৬.চিকিৎসক
৭.দন্ত চিকিৎসক
৮.ইলেক্ট্রিক ইঞ্জিনিয়ার
৯.ফিন্যান্সিয়াল কন্ট্রোলার
১০.আইনজীবী
১১.মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার
১২.গানের শিক্ষক
১৩.ডাটাবেজ ডেভেলপার
১৪.আইটি কনসালটেন্ট
১৫.নেটওয়ার্ক কনসালটেন্ট
১৬.সফটওয়্যার ডেভেলপার
১৭.সিষ্টেম ডেভেলপার
১৮.প্রোডাকশন ম্যানেজার
১৯.সেলস ম্যানেজার
এবং নার্স সহ আরো অনেক পেশাজীবীকে গ্রীণকার্ড পাওয়ার জন্য অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। বিস্তারিত জানার জন্য এখানে ক্লিক করুণ সেখানে আরও তথ্য পাবেন।
আবেদন প্রক্রিয়াঃ
যদি কেউ ডেনমার্কের গ্রীণকার্ডের জন্য যোগ্য মনে করে তবে তাকে নির্দিষ্ট আবেদন পত্রে আবেদন করতে হবে। এজন্য ঢাকাস্থ ডেনমার্ক দূতাবাসে যোগাযোগ করতে হবে। সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া শেষ করে ভিসা/গ্রীণকার্ড পেতে আবেদন করার পর থেকে ৪ থেকে ৫ মাস পর্যন্ত সময় লাগে। আবেদন রিফিউজ হলে আপিল করার সুযোগ আছে। ডেনমার্কের ভিসা/গ্রীণকার্ড পাওয়ার জন্য কোথাও কোন ধরনের ইন্টারভিউ দেওয়ার প্রয়োজন হয় না।
ঢাকাস্থ ডেনমার্ক দূতাবাসের ঠিকানাঃ
রয়েল ড্যানিশ এ্যাম্বাসী
হাউজ # ১, রোড # ৫১, গুলশান মডেল টাউন, ঢাকা – ১২১২।
ফোন: ০০ ৮৮০ (২) ৮৮২ ১৭৯৯
ফ্যাক্স: ০০ ৮৮০ (২) ৮৮২ ৩৬৫৮
ই-মেইল: dandhaka@citecheo.net
ওয়েব: http://bangladesh.um.dk/
খোলা ও বন্ধের সময়ঃ
রবিবার থেকে বৃহস্পতিবার। সকাল ৮.০০ টা থেকে বিকাল ৪.০০ টা পর্যন্ত।
প্রয়োজনীয় কাগজপত্রঃ
ভিসা আবেদনের জন্য সাধারণত যেসব কাগজপত্র জমা দিতে হয়।
- ১০ কপি রঙিন ছবি।
- সকল শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্র।
- কাজের অভিজ্ঞতার দলিলাদি।
- বিভিন্ন প্রশিক্ষণের সনদ।
- পাসপোর্টের ফটোকপি।
- ইংরেজী ভাষার উপর কোন কোর্স করা থাকলে তার সার্টিফিকেট (ন্যূনতম ১ বছরের কোর্স)।
- বিবিএ, এমবিএ অথবা ইংরেজী ভার্সন বা মাধ্যমের শিক্ষার্থীদের জন্য ইংরেজী কোর্সের প্রয়োজন নেই।
- এছাড়া এমন কর্মক্ষেত্র যেখানে ইংরেজী ভাষায় কথা বলার সুযোগ ছিল সেসব কর্মক্ষেত্রে কাজের অভিজ্ঞতার সনদপত্র।
- আইইএলটিএস করাদের পয়েন্ট ৬.৫ হলে ইংরেজী কোর্সের সার্টিফিকেট বা ইংরেজী ভাষায় কথা বলা কর্মক্ষেত্রের সনদপত্রের প্রয়োজন নেই।
- সেক্ষেত্রে আইইএলটিএস এর স্কোর ৬.৫ এর সনদপত্র/প্রমাণপত্র সংযুক্ত করতে হবে।
Leave a comment
You must be logged in to post a comment.