সামুয়েল হানেমান
জার্মান চিকিৎসাশাস্ত্রবিদ। হানেমান (Christian Friedrich Samuel Hahnemann) এ দেশে হ্যানিম্যান নামে পরিচিত। তিনি হোমিওপ্যাথি চিকিৎসাশাস্ত্রের জনক। জার্মানির অন্তর্গত সাক্সনির (ঝধীড়হু) মাইসেন (Saxony) নামের স্থানে ১৭৫৫ সালের ১০ এপ্রিল জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা গোটফ্রিড হানেমান (Gotfried Hahnemann) ছিলেন চিত্রকর। চীনামাটির পাত্রে ছবি আঁকার ক্ষেত্রে তিনি খুবই পারদর্শী ছিলেন। ১৭৭৯ সালে সামুয়েল এলিঙ্গেন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চিকিৎসাশাস্ত্রে এমডি ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি কয়েক বছর জার্মানির ড্রেসডেন ছাড়া আরো কয়েকটি স্থানে চিকিৎসা ব্যবসায় নিয়োজিত থাকেন।
১৭৯৬ সালে ৪১ বছর বয়সে তিনি একটি নতুন চিকিৎসা পদ্ধতি উদ্ভাবন করেন এবং এর তাত্ত্বিক দিক সম্পর্কে রূপরেখা দাঁড় করান ও নিয়মশৃঙ্খলা নির্ধারণ করেন। ১৮১০ সালে চিকিৎসা পদ্ধতিকে সুশৃঙ্খল ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত করে নাম দেন হোমিওপ্যাথি। তিনি যে বইয়ে এই চিকিৎসাশাস্ত্র ব্যাখ্যা করেন, তা ছিল স্বাভাবিকভাবে জার্মান ভাষায় লিখিত এবং সেটি প্রকাশিত হয়েছিল ১৮১০ সালে। বইটি ইংরেজি ভাষায় অনূদিত হয় এবং নাম দেয়া হয় অর্গানন অফ দ্য র্যাশনাল আর্ট অফ হিলিং (Organon of the Rational Art of Healing)। অনুবাদটি প্রকাশিত হয় ১৮১৩ সালে।
হোমিওপ্যাথি চিকিৎসায় রোগীকে সঠিক ওষুধ খুবই স্বল্পমাত্রায় প্রয়োগের ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়। কিন্তু রোগীকে স্বল্পমাত্রায় ওষুধ প্রয়োগের বিষয়টি তার রক্ষণশীল সমচিকিৎসকরা, বিশেষ করে ওষুধ প্রস্তুতকারক ও বিক্রেতারা তাদের স্বার্থবিরোধী বলে সমর্থন করতে পারেননি। তারা হানেমানের বিরুদ্ধাচরণ শুরু করেন। ফলে তাকে বাধ্য হয়ে ১৮২১ সালে জার্মানির লিপজিগ (Leipzig) ত্যাগ করে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে আশ্রয় নিতে হয়। এখানেই তিনি ১৮৪৩ সালের ২ জুলাই পরলোকগমন করেন।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন