থ্যালাসেমিয়া হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসায় সেরে যায়
থ্যালাসিমিয়া রক্তের এমন একটি মারাত্মক রোগ যা শিশুরা বংশগতভাবে তাদের পিতা-মাতা থেকে পেয়ে থাকে। বিজ্ঞানীদের মতে, সাধারণত চাচাত ভাই-বোনদের মধ্যে বিয়ে হলে সন্তানদের থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। এই রোগীদের রক্তের লাল কণিকা (RBC) তাড়াতাড়ি ধ্বংস হয়ে যায়। ফলে তাদের রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কম থাকে এবং আয়রণের পরিমাণ বেড়ে যায়। এই কারণে এদেরকে ২০ থেকে ৩০ দিন পরপর রক্ত দিতে হয় এবং শরীর থেকে অতিরিক্ত আয়রণ বের করার জন্য ঔষধ খেতে হয়। খুব ছোট শিশুদের মধ্যে রক্তশূণ্যতা, জ্বর, শারীরিক বৃদ্ধি না হওয়া, প্লীহা বড় হয়ে যাওয়া (Splenomegaly) ইত্যাদি লক্ষণ দেখে থ্যালাসেমিয়া রোগ সন্দেহ করেন এবং রক্তের বিশেষ মাইক্রোসকোপিক পরীক্ষার মাধ্যমে থ্যালাসেমিয়া সম্পর্কে নিশ্চিত হন। যেহেতু এই রোগের চিকিৎসায় প্রচুর টাকা খরচ হয়, সেহেতু মধ্যবিত্ত বা দরিদ্ররা এই রোগে আক্রান্ত হলে ভিখিরি হতে বেশী সময় লাগে না। এতো পয়সা খরচ করেও এসব শিশুদেরকে সাধারণত বিশ-ত্রিশ বছরের বেশী বাচাঁনো যায় না। ধ্বংসপ্রাপ্ত লাল কণিকা থেকে নির্গত আয়রণ লিভার, হৃৎপিন্ড এবং পেনক্রিয়াসে জমা হতে থাকে এবং শরীরের অতিরিক্ত আয়রণের বিষক্রিয়ায় এরা লিভার সিরোসিস, হার্ট ফেইলিওর, প্লীহা বড় হওয়া ইত্যাদি রোগে আক্রানত হয় এবং এদের শরীরে যৌবনের আগমণ ঘটে বিলম্বে আর এদের শারীরিক বৃদ্ধিও তেমন একটা ঘটে না।
ভূমধ্যসাগরের তীরবর্তী দেশসমুহে এই রোগের প্রকোপ বেশী। এটি একটি মারাত্মক জেনেটিক ডিজিজ বিধায় খুব একটা নিরাময় হয় না বলে সবাই বিশ্বাস করত। তবে ইদানীং বিভিন্ন দেশের অনেক হোমিও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অগণিত থ্যালাসিমিয়া রোগীকে সমপুর্ণরূপে আরোগ্য করার দাবী করেছেন যাদের ডিসচার্জ করার পর পাচঁ-ছয় বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পরেও রক্ত দেওয়ার প্রয়োজন হয়নি। হোমিও স্পেশালিষ্টদের মতে, শতকরা ৫০ ভাগ থ্যালাসেমিয়া রোগীকে হোমিও চিকিৎসার মাধ্যমে পুরোপুরি রোগমুক্ত করা সম্ভব। আর অবশিষ্ট থ্যালাসেমিয়া রোগীরা পুরোপুরি রোগমুক্ত না হলেও হোমিও চিকিৎসায় তাদের অবস্থা এতটাই উন্নত হয় যে, ছয়মাসে বা বছরে একবার রক্ত নিলেই চলে। হ্যাঁ, হোমিওপ্যাথিতে মনো-দৈহিক গঠনগত চিকিৎসা (Constitutional treatment) নামে এক ধরণের চিকিৎসা পদ্ধতি প্রচলিত আছে যার অর্থ হলো রোগের লক্ষণ, রোগীর শারীরিক লক্ষণ, রোগীর মানসিক লক্ষণ, রোগীর বংশগত রোগের ইতিহাস ইত্যাদি বিচার করে ঔষধ প্রেসক্রাইব করা। এতে চিকিৎসককে একজন রোগীর পেছনে প্রচুর সময় দিতে হয় এবং তাকে নিয়ে অনেক চিনতা-ভাবনা করতে হয়। হোমিওপ্যাথির দুইশ বছরের ইতিহাসে দেখা গেছে যে, কন্সটিটিউশনাল ট্রিটমেন্টে এমন সব কঠিন রোগও খুব সহজে নিরাময় হয়ে যায় যা অন্যান্য চিকিৎসা বিজ্ঞানে একেবারে অবিশ্বাস্য মনে করা হয়ে থাকে। থ্যালাসেমিয়া থেকে মুক্তির জন্য অবশ্যই একজন হোমিও স্পেশালিষ্টের পরামর্শ মতো চলা উচিত (যিনি রোগীর শারীরিক-মানসিক-পারিবারিক লক্ষণ বিবেচনা করে সঠিক ঔষধ নির্বাচন করে প্রয়োগ করবেন)। যারা কোন কারণে হোমিও স্পেশালিষ্টের সাথে যোগাযোগ করতে অক্ষম, তারা নীচের ঔষধগুলো আমার নির্দেশিত নিয়ম অনুসারে খেয়ে দারুণভাবে উপকৃত হবেন।
যাদের প্লীহা বড় হয়ে গেছে (Splenomegaly) তারা Ceanothus Americanus (Q) অথবা Carduus marianus (Q) ঔষধ দুইটির মাধ্যমে তা থেকে মুক্তি পেতে পারেন (১০ ফোটা করে রোজ ৩ বার খান)। বাডওইগ ডায়েট প্রোটোকল অনুসারে খাবার খান (যতটা সম্ভব)।
[ ভাল লাগলে পোস্টে অবশ্যই কমেন্ট বা শেয়ার করুন , শেয়ার বা কমেন্ট দিলে আমাদের কোনো লাভ অথবা আমরা কোনো টাকা পয়সা পাই না, কিন্তু উৎসাহ পাই, তাই অবশ্যই শেয়ার করুন । ]
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন