হলুদ
হলুদ বা হলদি (বৈজ্ঞানিক নামঃ Curcuma longa) হলো হলুদ গাছের শিকড় থেকে প্রাপ্ত এক প্রকারের মসলা।[২] ভারত, বাংলাদেশ এবং পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের রান্নায় এটি ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। এটি আদা পরিবারের (Zingiberaceae) অন্তর্গত একটি গুল্মজাতীয় উদ্ভিদ।
হলুদ গাছের আদি উৎস দক্ষিণ এশিয়া। এটি ২০ থেকে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার মধ্যে জন্মে থাকে। হলুদ গাছের জন্য প্রচুর পরিমাণে বৃষ্টিপাতের দরকার হয়। বছরে সাধারণত একবার হলুদ গাছের শিকড় তোলা হয়। পরের বছর পুরানো শিকড় থেকে নতুন গাছ গজায়।
হলুদ গাছের শিকড়কে কয়েক ঘণ্টা সিদ্ধ করা হয়, তার পর গরম চুলায় শুকানো হয়। এরপর এই শিকড়কে চূর্ণ করে গাঢ় হলুদ বর্ণের গুঁড়া পাওয়া যায়। এই হলুদ গুড়া দক্ষিণ এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের নানা দেশের খাদ্য প্রস্তুতে ব্যবহার করা হয়। তবে ঐতিহ্যগতভাবে এই শিকড় ভালোভাবে ধৌতকরণের পর শিল-পাটায় পানি সহযোগে বেটে নিয়ে হলুদের লেই তৈরি করা হয় যা সরাসরি রান্নায় ব্যবহার করা হয়।
জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ/রাজ্য : Plantae
অবিন্যাসিত : Angiosperms
অবিন্যাসিত : Monocots
বর্গ : Zingiberales
পরিবার : Zingiberaceae
গণ : Curcuma
প্রজাতি : C. aromatica
দ্বি-পদ নাম : C. aromatica Salisb.
ইতিহাস
হলুদ নামের উৎস আজও অজানা। মহাজাতি বা Genus নাম Curcuma হলুদ নামটা আরবি থেকে আসে।
হলুদ হাজার হাজার বছর ধরে এশিয়া মহাদেশে রান্না শিল্পে ব্যাবহার হয়ে আসছে। অন্য দিকে হলুদ একটি ঔষধি গাছ হিসেবে সুপরিচিত।
গাছ সম্পর্কিত বর্ণনা
হলুদ একটি লতাপাতা সংক্রান্ত বহুবর্ষজীবী উদ্ভিদ, যা ৬০ -৯০ সেমি উঁচু এবং এটা পাতা বড় আয়তাকার হয়ে থাকে। এবং উদ্ভিদটি এক মিটার লম্বা হয়। এটার গাছ বেড়ে উঠার জন্য ২০-৩০ ডিগ্রী তাপমাত্রা এবং প্রচুর বৃষ্টিপাত দরকার।
পুষ্পবিন্যাস,ফুল এবং ফল
হলুদ ফুলের রং হলুদ ও সাদা হয় এবং ৩০ -৪০ সেমি লম্বা এবং ৮ -১২ সেমি চওড়া। পুষ্পবিন্যাস এর দৈর্ঘ্যে ১০ -১৫ সেমি ।
হলুদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রাসায়নিক উপাদান curcuminoids নামক যৌগের একটি গ্রুপ আছে, যা curcumin বা diferuloylmethane, demethoxycurcumin এবং bisdemethoxycurcumin অন্তর্ভুক্ত। গবেষণাতে দেখা যায় হলুদের গুঁড়াতে curcumin গড়ে ৩.১৪ % আকারে থাকে। অথচ ভিন্ন ভিন্ন প্রজাতির হলুদে curcumin এর পরিমান বড় তারতম্য আছে। উপরন্তু, অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ উদ্বায়ী তেল turmerone, atlantone, এবং zingiberene অন্তর্ভুক্ত। কিছু সাধারণ উপাদানসমূহ চিনি, প্রোটিন, এবং রেসিন থাকে।
Leave a comment
You must be logged in to post a comment.