সর্পগন্ধা
সর্পগন্ধা একটি গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদ।এ গাছ সাধারণত এক মিটার উঁচু হয়ে থাকে। পাতা সরল, লম্বাটে, অগ্রভাগ সরু উজ্জল বর্ণের হয়ে থাকে। সাধারণত প্রতিটি গিটে ৩টি করে পাতা থাকে। গুচ্ছাবদ্ধ গোলাপী ফুল হয়। ফল প্রথমে সবুজ, পরে পাকলে বেগুনী-কালো রংয়ের হয়ে থাকে। এর মূল ধূসর বর্ণের। কাঁচা মূলের গন্ধ কাঁচা তেঁতুলের মতো। গ্রীস্মকালে ফুল ফোঁটে ও বর্ষাকালে ফল পাকে।
অন্যান্য স্থানীয় নাম: সর্পাদনী, সর্পক্ষী
বৈজ্ঞানিক নাম : Rauwolfia sarpentina
পরিবার : Apocynaceae
ব্যবহার্য অংশ: মূল
হোমিওপ্যাথি ঔষধ Rauwolfia sarpentina
বিস্তার: সর্পগন্ধা, বাংলাদেশ, ভারত, শ্রীলঙ্কা মায়ানমার, নেপাল, ভূটান, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়ায় দেখা যায়। বাংলাদেশের দিনাজপুর, ময়মনসিংহ, সিলেট, চট্টগ্রামে বিক্ষিপ্ত ভাবে দেখা যায়।
বীজ সংগ্রহ সময়: আগস্ট-নভেম্বর
বীজ আহরণ ও চারা উত্তোলন: সর্পগন্ধার ফুল ও ফল দীর্ঘ সময় পর্যন্ত গাছে থাকে। একই গাছে ফুল এবং কাঁচা ফল দেখা গেছে। পাকা ফলের রং ঘন নীল বা কালছে নীল রংয়ের। পাকা ফলের রসালো অংশ ছাড়িয়ে বীজ আলাদা করে শুকিয়ে ৪/৫ মাস পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যায়।
ওষুধি গুণাগুন:
উচ্চ রক্তচাপ, অনিদ্রা, উন্মাদ, ও হিস্টিরিয়া রোগে উপকারী। উত্তেজনা হ্রাসকারক ও শান্তকারক।
সর্পগন্ধার ওষুধি ব্যবহার:
◘ অনিদ্রা ও উচ্চ রক্তচাপে: ২০০-৫০০ মিলিগ্রাম মূল চূর্ণ প্রত্যহ ১-২ বার পানিসহ সেব্য। এক মাস সেবনে উপকার পাওয়া যায়।
◘ উন্মাদ ও হিস্টিরিয়ায়: ২০০-৫০০ মিলিগ্রাম মূল চূর্ণ প্রত্যহ একবার প্রয়োজনে দুই বার দুধ ও চিনিসহ সেব্য। নিয়মিত ২০-২৫ দিন সেবন করে যাওয়া আবশ্যক।
◘ এটি অত্যন্ত উত্তেজনানাশক ও নিদ্রাকারক। উপযুক্ত মাত্রায় সেবন করলে সুনিদ্রা হয় ও উন্মত্ততা হ্রাস পায়। সে কারণে উন্মাদ চিকিৎসার ক্ষেত্রে সর্পগন্ধার মূল ব্যবহৃত হয়।
◘এর মূল বায়ুর উর্ধগতিকে দমন করে। বিষধর সাপে কামড়ালে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়। এক্ষেত্রে সর্পগন্ধা বায়ুচাপ দমন করে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে। এর ফলে চিকিৎসকরা চিকিৎসা করার সময় পান।
◘ এ ছাড়াও মূলের নির্যাস তলপেটের ব্যথা, ডায়রিয়া, আমাশয় এবঙ জ্বরের ওষুধ হিশেবে ব্যবহৃত হয়।
রাসায়নিক উপাদান: সর্পগন্ধা মূলে ইনডোল এলকালয়েড রয়েছে যাতে রিসারপিন, ডিসারপিডিন, রেসিনামিন থাকে। অন্যান্যের মধ্যে আজমলীন, আজমালিসিন, সার্পেন্টাইন, অলিওরেসিন, ও আনস্যাচুরেটিভ এলকোহল ইত্যাদি রয়েছে।
◘ সর্পগন্ধা গাছের মূলের রস নিদ্রাকারক হিসেবে ব্যবহৃত হয় এবং উচ্চ রক্তচাপ রোধ করে।
Leave a comment
You must be logged in to post a comment.