ভিটামিন ডি এর উপকারিতা
আমরা সকলেই কম বেশি জানি, ভিটামিন ডি এর সমৃদ্ধ উৎস হল সূর্য। সূর্যের আলোতে ভিটামিন ডি রয়েছে। আমাদের শরীরের অত্যন্ত প্রয়োজনীয় পুষ্টিকর উপাদানগুলোর মধ্যে একটি হল ভিটামিন ডি। যখনই আমাদের শরীর অতিরিক্ত পরিমাণে বা সামান্য পরিমাণে ভিটামিন ডি পায়, তখনি আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরণের সমস্যা দেখা যায়। অর্থাৎ, ভিটামিন ডি যেন পর্যাপ্ত পরিমাণে পাওয়া যায়, তা লক্ষ্য রাখতে হবে।
ভিটামিন ডি শরীরের হাড়কে শক্তিশালী করে। যাদের মুখে ব্রণ এর সমস্যা রয়েছে, তারা ব্রণকে হাত দিয়ে না খুঁচিয়ে প্রতিদিন কিছু সময় সূর্যের আলোতে দাড়িয়ে থাকলে বেশ উপকার পাবে। সূর্যের আলোতে যে ভিটামিন ডি রয়েছে, তা ত্বকের ব্রণ দূর করতে সাহায্য করে। সূর্যের অতি-বেগুনী রশ্মি হতে ভিটামিন ডি ত্বকে উন্মুক্ত হয়।
বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, আমাদের প্রতিদিন অন্তত ২০ মিনিট সূর্যের আলোতে থাকা উচিৎ, যাতে শরীরের প্রয়োজনীয় পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন শরীর নিতে পারে। তবে আপনি যদি আপনার ত্বকের ট্যানিং এর বিষয়ে চিন্তিত হন। তাহলে, কিছু খাবার রয়েছে, যা খেলে আপনার শরীরের প্রয়োজনীয় ভিটামিন ডি পেয়ে যাবেন। বিভিন্ন ধরণের দুগ্ধজাত পণ্য, ডিম, কড লিভার তেল এবং স্যামন ও টুনা মাছের মত তৈলাক্ত মাছে ভিটামিন ডি রয়েছে। অন্যথায় আপনার যদি প্রয়োজন মনে হয়, তাহলে আপনি ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ভিটামিন ডি এর সম্পূরক ক্যাপস্যুল খেতে পারেন।
সূর্য এক্সপোজার এর অভাবে শুধু ভিটামিন ডি এর অভাব হয় না, সাথে সাথে ঋতু আবেগপূর্ণ বিশৃঙ্খলা (SAD- Seasonal Affective Disorder) সৃষ্টি হতে পারে। বর্ষা ও শীতের সময় যখন সূর্যের এক্সপোজার সর্বনিম্ন হয়, তখন এই সমস্যার সৃষ্টি হয়। SAD এর ফলে মানুষ নিজেকে অলস, অদক্ষ মনে করেন। তাদের মাঝে বিষণ্ণতার সৃষ্টি হয়। গবেষণায় দেখা গেছে, নিজের মনকে বিভিন্ন দিকে পরিচালনা করলে এসব থেকে খুব সহজেই নিজেকে রক্ষা করা যায়। এর উপসর্গ অনেক খারাপ, তাই প্রথম থেকে পেশাগতদের সাহায্য নেয়া ভালো।
অন্যদিকে, যে সকল মানুষ অত্যাধিক পরিমাণে ভিটামিন ডি পেয়ে থাকেন, তাদের বমি বমি ভাব, ক্ষুধা ও কোষ্ঠকাঠিন্যের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। এছাড়াও, এর ফলে কিডনি ও যকৃতেরও ক্ষতি হতে পারে। তাই, অবশ্যই এর ভারসাম্য বজায় রাখা শিখতে হবে।
ভিটামিন ডি বা ক্যাল্সিফেরল
উৎস:
- সুর্য আলোক রশ্মির উপস্থিতিতে মানবদেহের চর্মে উৎপন্ন হয়।
- ভোজ্য তেল, দুগ্ধ ও দুগ্ধ জাতীয় খাদ্য, বিভিন্ন মাছের তেল, ডিমের কুসুম, মাখন,ঘি, চর্বি এবং ইলিশ মাছের থেলে পর্যাপ্ত পরিমাণে পাওয়া যায়।
কাজ:
- অস্থি ও দাঁতের কাঠামো গঠন।
- অন্ত্রে ক্যালসিয়াম এর শোষণ বাড়ায়।
- রক্ত প্রবাহে ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস এর মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে।
অভাবজনিত রোগ
রিকেটস্:
লক্ষণসমূহ:
- ভিটামিন ডি ও ক্যালসিয়াম এর অভাবে শিশুর হাড় নরম হয়ে যায় এবং বৃদ্ধি ব্যাহত হয়।
- পায়ের হাড় ধনুকের মত বেঁকে যায় এবং দেহের চাপে অন্যান্য হাড়গুলোও বেঁকে যায়।
- হাত ও পায়ের অস্থিসন্ধি বা গিট ফুলে যায়।
- বুকের হাড় বা পাজরের হাড় বেঁকে যায়।
প্রতিরোধ:
শিশুকে ভিটামিন “ডি” সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ানো। শিশুকে কিছুক্ষণের জন্য সূর্যের নরম আলোয় বিশেষ করে সকাল ও বিকাল বেলা খেলাধুলা করতে দেওয়া।
অস্টি ও ম্যালেশিয়া:
বয়স্কদের রিকেটস্ অস্টিওম্যালেশিয়া নামে পরিচিত।
লক্ষণসমূহ:
- অন্ত্রে ক্যালসিয়াম শোষণে বিঘ্ন ঘটে।
- ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস এর সঞ্চয় কমতে থাকে।
- থাইরয়েড গ্রন্থির কাজের পরির্বতন ঘটে।
- অস্থি দূর্বল ও কাঠিন্য কমে যায় ফলে হালকা আঘাতে অস্থি ভেঙে যাওয়ার সম্ভবনা অনেক বেশি।
প্রতিরোধ:
উপযুক্ত পরিমাণে ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন “ডি” যুক্ত খাবার গ্রহণ করা।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন