পোল্যান্ডে কিভাবে স্টুডেন্টস ভিসা থেকে জব ভিসায় পরিবর্তন করবেন ?
প্রিয় সম্মানিত পাঠক বৃন্দ আশাকরি মহান সৃষ্টি কর্তার অশেষ রহমতে আপনারা সবাই ভালো আছেন। আসালামু আলাইকুম বন্ধুরা সময়ের অভাবে ঠিক কোনো টপিক নিয়ে আলচনায় আসতে পারি না। আজকে একটু সময় বের করে নিলাম পোল্যান্ড নিয়ে টুকিটাকি আলাপ করব বলে।আজকের বিষয়বস্তু পোল্যান্ড আসার পর কিভাবে আপনার স্টুডেন্টস ভিসা/পারমিট ওয়ার্ক পারমিটে পরিবর্তন করবেন? কি কি কন্ডিশন ইত্যাদি ইত্যাদি।
ইউরোপে আমেরিকা আর আগে মানুষ শপ্ন থাকে এক রকম, আসার পর সেটার রুপ অন্য রকম। দেশে থাকা অবস্থায় প্রায় অনেকের ধারনা ইউরোপে একবার প্রবেশ করতে পারলেই লাখ লাখ টাকা আর পি.আর পেয়ে যাবে খুব সহজে।অথচ ইউরোপের চিত্র সম্পূর্ণ বিপরীত। কোন দেশে আসার আগে সঠিক তথ্য না জানলে এসে প্রব্লেম এর কোন শেষ নেই। আজকাল দেখা যায় অনেক ছেলেমেয়ে বিভিন্ন এজেন্সির মাধ্যমে ইউরোপে আসার ব্যাপারে খুব তুড়্গহুড় করে।এজেন্সির দেয়া তথ্য আর বাস্তবতায় কোন মিল থাকে না।
এই ত কিছু দিন আগে একটা নামকরা পত্রিকার বিজ্ঞাপন চোখে পরল। খুব সম্বভ এজেন্সিটি চট্টগ্রামের কোন যায়গায় হবে। এমন লিখা ছিল বিজ্ঞাপনে – আমরা সুইডেনে স্টুডেন্টস/ ওয়ার্ক ভিসা প্রসেস করি ১০০% গ্যারান্টি সহকারে ৩ বছর পর পি.আর পেতে সাহায্য করি ! 😛 বিজ্ঞাপন দেখে নিজেও টাস্কি খেয়ে গেলাম শুধু এই বিজ্ঞাপনই নয় এমন হাজারো বিজ্ঞপন এখন চোখে পড়ে। আসুন বিদেশ ভ্রমনের পূর্বে সত্য গুলো জেনে বিদেশ আসি। ইউরোপের কোন দেশেই ৩ বছরে নরমালি পি. আর / পার্মানেন্ট রেসিদেন্স পারমিট নেয়ার সুযোগ নেই। যারা আপনাকে , আপনার অজ্ঞতাকে লোফে নেয়ার চেষ্টায় মগ্ন এরা দালাল ছাড়া বৈ কিছুই না । ইউরোপের হাতে গোনা কয়েকটা দেশ আছে যেখানে চাইলে কোন না কোন ভাবে লিগালি থেকে সেটেল হবার সুযোগ থাকে। অথচ বাংলাদেশ থেকে তারা কেহই জেনে আসেন না কোন কোন দেশে গেলে আমাকে পড়াশুনা শেষে দেশে ফেরত আসতে হবে না?
সবাই মনে করেন যে বিদেশে যাচ্ছি পরতে ওই দেশেই সেটেল হয়ে যাওয়া যাবে! আসলে ই কি তাই? না দুনিয়া এত সহজ না ।…………………প্রথম জীবনে ইউরোপে আসার পেছনে ২ টা জিনিস কাজ করত আমার মাথায়। প্রথমত আমি পড়াশুনা করে দেশে ফিরব, ২য়ত ভাল জব টব করে মোটা অংকের টাকা নিয়ে দেশে ফেরত যাব। কিন্তু ইউরোপে আসার পর চিন্তা ধারা সম্পূর্ণ বলদে গেল। ইউরোপের পরিবেশে ২-৪ বছর পড়াশুনার পর কেহই চান না দেশে ফিরে যেতে, খুজতে থাকেন স্থায়ী বসাবসের রাস্তা।
আমি সেটেলমেন্ট নিয়ে কখনো ভাবতাম না, এই জন্য যে দেশে আমার ফিরে যেতেই হবে। এক মায়ের এক ছেলে বিদেশ থেকে আমার লাভ কি। যাই হোক ধারনা পাল্টে গেল এক সময়। দেশের আর ইউরোপে জীবনের মধ্যে তফাৎ খুজতে লাগলাম। কারন গুলো উদঘাটন করলাম, কেন? আমাকে দেশে ফেরত না যেয়ে ইউরোপের কোন দেশে সেটেল হতে হবে। সেই অনুযায়ী কাজ করতে থাকলাম। অবশেষে পিঁপড়া মিষ্টির স্বাদ নিবে। যাইহোক চলেন কথা না বাড়াই আর আমাদের আজকের টপিক পোল্যান্ড নিয়ে কিভাবে পোল্যান্ড আসার পর সেটেল হওয়া যায়। বলতেছিলাম ইউরোপের হাতে গুনা কয়েকটা দেশে পড়াশুনা বা জব নিয়ে প্রবেশের পর স্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগ আছে এর মধ্যে পোল্যান্ড একটা । আপনি যদি সেটেলমেন্ট এর চিন্তা করে ইউরোপে আসেন তাহলে আগে থেকে প্রস্তুতি নিয়ে আসতে হবে কোন দেশে সেটেল হওয়া যাবে ।
আসুন দেখি ধাপ গুলো।
সর্ব প্রথম আপনাকে যে কাজটি করতে হবে সেটা হল আপনাকে পোলিশ ট্যাক্স অফিসে রেজিস্টার করা কোন ব্যক্তি মালিকানাধীন বা কোম্পানি থেকে জব কন্টাক মেনেজ করতে হবে । জব কন্টাক্ট দিতে আগ্রহী হলে মালিক লিখিত জব কন্টাক্ট সহ ইমিগ্রেশন অফিসে জমা করবে। আপনাকে ততদিন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে যতদিন আপনার ওয়ার্ক পারমিট ইমিগ্রেশন অফিস থেকে ইস্যু না হয়। কোম্পানির দেয়া জব কন্টাক্ট নিয়ে ইমিগ্রেশন অফিসে মালিক পক্ষ আবেদনের ২-৬ মাসের মধ্যে আপনার ওয়ার্ক পারমিট ইস্যু হবে। ওয়ার্ক পারমিট আবেদনের সময় অবশ্যই আপনার স্টুডেন্টস ভিসা ভ্যালিড থাকতে হবে। ওয়ার্ক পারমিট ইস্যু হয়ে গেলে আপনাকে যা করতে হবে? ট্যাক্স নাম্বার সংগ্রহ করতে যেতে হবে ট্যাক্স অফিসে। ট্যাক্স নাম্বার সংগ্রহ করতে কিভাবে ক্যামনে কি বিস্তারিত তথ্য পাবেন এই লিঙ্কে – http://stat.gov.pl/, তারপর সোশ্যাল সিকিউরিটি নাম্বার নিতে হবে। সোসাল সিকিউরিটি নাম্বার এর ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য পাবেন এই সাইটে – http://www.zus.pl/
# পোলান্ডে মিনিমাম ১ বছরের রেসিডেন্স ভিসা ইস্যু করে এম্বাসসি থেকে। পোলান্ড আসার পর এই ভিসার মেয়াদ শেষ হবার ২ মাসে আগে আপনি TRP এর জন্য আবেদন করতে পারবেন। নরমালি স্টুডেন্টস ভিসায় পোলান্ডে লম্বা সময় থাকার পর PR- Permanant Residence Permit আবেদন করতে পারে, সময় ৮-১০ বছর লিগাল থেকে পড়াশুনা করার পর পি.আর আবেদনের যোগ্য হন। ছাত্র থাকাকালীন সময় গুলো তারা অর্ধেক ধরে হিসাব করে অর্থাৎ ৫ বছর নরমালি পি. আর আবেদনের নিয়ম থাকলেও সেটা স্টোডেন্টদের ক্ষেত্রে প্রযোয্য হবে না। শুধুমাত্র যারা দক্ষ শ্রমিক, প্রসেশনাল জব সেকার, বিজনেসম্যান হিসাবে থাকবেন তারা ৫ বছর পর পি আর আবেদন করতে পারবেন।
২# আপনি ছাত্র থাকা অবস্থায় মিনিমাম ১ বছর পর জব ভিসা/রেসিডেন্স পারমিটে পরিবর্তন আবেদন করতে পারবেন।
৩# পোলান্ডের ট্যাক্স অফিসে রেজিস্টারকৃত যেকোনো বিজনেস, কম্পানী, প্রতিষ্ঠান থেকে ফুল টাইম (৮ ঘণ্টা মিনিমাম) জব কন্টাক্ট মেনেজ করতে হবে।
৪# কন্টাক্ট মিনিমাম ৬ মাস মেয়াদি হতে হবে। এবং সেটা সোসাল সিকিউরিটি অফিসে জানাতে হবে মালিক্ পক্ষকে।
৫# সেলারি ন্যাশনাল লেভেলের হতে হবে। ০১/০১/২০১৬ থেকে পোলান্ডের মিনিমাম সেলারি ১৮৫০.০০ PLN হতে হবে।
৬# আপনাকে অবশ্যই ট্যাক্স পে করতে হবে 425.50 PLN .
আর এই সম্পূর্ণ প্রসিডিউরে আপনার জন্য মুল ভুমিকায় থাকবে আপনার কোম্পানি, সব কাজ শুরু থেকে শেষ মালিক করে দিবে। আপনার কাজ শুধু Residence permit ইমিগ্রেশন থেকে ইস্যু হবার আগ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
(C) ইবিডিনিউজ২৪
Leave a comment
You must be logged in to post a comment.